“স্পটলাইট” নামটি দেওয়ার একটা কারণ আছে তাহলো ২০১৫ সালে খ্রিস্টান যাজকদের শিশুকামিতার উপর ভিত্তি করে একটি সিনেমা বানানো হয়। এছাড়াও অতীতে আমরা দেখেছি ভ্যাটিকান সিটি’র পোপ এসব অভিযোগ মাথা পেতে নিয়েছেন, স্বীকার করেছেন এবং এর জন্যে ক্ষমাও চেয়েছেন। খ্রিস্ট সমাজের মতন আমাদের সমাজে একই জিনিস প্রতিনিয়ত ঘটে যাচ্ছে অথচ এগুলো থেকে যাচ্ছে আলোচনার বাহিরে কিংবা সংবাদের বাহিরে। আমরা কেউ এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা কিংবা কোন ধরণের মন্তব্য করতে স্বস্তি বোধ করি না। কেউবা ভাবে এগুলো নিয়ে আলোচনা করলে ধর্মীয় বিদ্বেষী হিসেবে পরিচিতি পেয়ে জীবনটা হারাব কেউবা ভাবে এগুলো নিয়ে আলোচনা করলে নিজের ধর্মের হুজুরদের বদনাম করা হবে। এই ঘটনাগুলো ভারতীয় মিডিয়া’তেও দেখা যায়। ভারতে শিশুকামিতা কিংবা ধর্মীয় ব্যক্তি কর্তৃক নারীদের ধর্ষণের অভিযোগে অনেকের সাজা হয়েছে। তবে আমাদের সমাজ এতো বেশি রক্ষণশীল ও আতঙ্কগ্রস্ত যে এই বিষয়ে কেউ সরাসরি কোন কথা বলতে নারাজ। কথা বলতে নারাজ কিংবা অস্বীকার যাই করি না কেন ঘটনাগুলো কিন্তু কখনো থেমে নেই। আর পত্রিকার পাতায় হাজারো ঘটনার সামান্য অংশ শুধু স্থান পায়। হাজার হাজার কাহিনী থেকে যায় আমাদের অজানা, হারিয়ে যায় চাপা কোন কষ্টে।
এই ঘটনাগুলো বলার আগে আমাদের সমাজের ধর্ষণের বিষয়গুলো মাথায় থাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশে অধিকাংশ শিশু, নারী ধর্ষিত হয় তার পরিচিত কিংবা কাছের কিংবা দূরের পরিবারের মানুষের হাতে। নাহ এগুলো কোন গল্প নয় এগুলো বাস্তবতা। কিছুদিন আগে এমনই একটা রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় সেখানে অধিকাংশ ভিকটিম বক্তব্যে দিয়েছে; অধিকাংশ সময় তারা তাদের পরিচিত কিংবা পরিবারের অন্য মানুষের হাতে রেপ হয়েছেন।
বাংলাদেশে শিশুকামিতা নিয়ে কথা উঠলে একদল এসে প্রথমেই বলবে শিশুকামিতা বিপক্ষে বলছেন অথচ সমকামিতার বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন না। ধর্ষণ ও সঙ্গম কিংবা সেক্স যেমন এক না তেমনি শিশুকামিতা অথবা পুরুষের সাথে একটা ছেলে শিশুর সেক্স আর প্রাপ্তবয়স্ক একটি মানুষের সম্মতিক্রমে অন্য আরেকটি মানুষের সাথে যৌন মিলন এক না তা আপনাকে আগে বুঝতে হবে। ধর্ষণ হল সেই ঘটনা, যেখানে যৌন সম্পর্কের প্রতি বিপরীত পক্ষের মানুষটির সম্মতি থাকে না। সুতরাং স্বামী-স্ত্রী’তেও রেপ হতে পারে। রেপ অনৈতিক কাজ হলেও প্রতিটি অনৈতিক কাজ রেপ না। যেমন- কেউ পরকীয়া করলে তা রেপ হবে না। তেমনি শিশুকামিতা’কে সমকামিতা বলা আপনার অজ্ঞতা প্রকাশ পায় মাত্র। বাংলাদেশে এগুলো নিয়ে কথা বললে জীবন হুমকিতে পড়তে পারে তা অস্বাভাবিক না কিন্তু সমাজের মানুষ হিসেবে আমাদের দায় আছে বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসার। তা সমাজের স্বার্থে আমাদের শিশুদের ও পরিবারের স্বার্থেই। যারা স্পর্টলাইট মুভিটির রিভিউ পড়তে চান তাদের জন্য লিংক দেওয়া হল-SPOTLIGHT, শিশুকামিতা নিয়ে সংবেদনশীল একটি সত্যকে স্পটলাইটে নিয়ে আসার গল্প
শিশুকামিতাকে ইংরেজীতে বলে পেডোফিলিয়া। ১৩ বছর (কোন কোন যায়গায় ১১ বছর) এবং তার কম বয়সী শিশুদের প্রতি যৌনাচারকে পেডোফিলিয়া হিসেবে দেখা হয়। অনেক সিরিয়াল কিলারের মধ্যে শিশুকামিতা লক্ষ্য করা যায়। এই সমস্যা শুধু বাংলাদেশে নয় পৃথিবীর সব দেশেই কম বেশি এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে সবাইকে। সম্প্রতি লন্ডন টাইমস পত্রিকা ব্রিটেনে মুসলিমদের হাতে শিশুদের যৌন অনাচারের তথ্য সম্বলিত পুলিশের এক গোপন দলিল ফাস করে দিয়েছে। ভোক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছে শ্বেতকায় ইংরেজ শিশুরা, যারা স্থানীয় মুসলিম কাউন্সিল আয়োজনে উর্দু ভাষা লিক্ষা গ্রহণ করতে এসে ১২ বছর বয়স থেকে যৌন অনাচারের শিকার হয়েছে।
অধিকাংশ সময় শিশুদের ভুলিয়ে ভালিয়ে কিংবা কখনো জোর করে এসব কাজ করা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় শিশুদের বিভিন্ন কিছুর লোভ দেখিয়ে তাদের উপর নির্যাতন করা হয়। প্রথমে তাদের সাথে কিছু খারাপ জোক বলল। শিশুটিকে হয়ত বলা হলো আমার আর তোমার মধ্যে যেগুলো কথা হয় সেগুলো অন্যদের সাথে শেয়ার করো না। শিশুটিও অবুঝ মনে মেনে নিল। তখন আস্তে আস্তে শিশুটির সাথে খারাপ জোক বলা শুরু করল। শিশুটিও বুঝতে পারল এই কথাগুলো সবার সামনে কেউ বলে না। বা কেউ বললে তাকে খারাপ বলা হয় কিংবা পিতা-মাতা পিটুনি দেবে। তখন সে আর বাহিরে কথাগুলো প্রকাশ করে না। এভাবে আস্তে আস্তে জোক বলার সাথে সাথে খারাপ ছবি দেখা শুরু হল। একসময় তাকে বলা হয় তোমার শরীরেও এমন জিনিস আছে। তখন সে বিস্ময় প্রকাশ করে তখন ঐ মানুষটা তার শরীরের জামা খুলে বিভিন্ন অঙ্গ দেখাতে থাকে। তারপর খারাপ ছবির মতন কিংবা গল্পের মতন শিশুটিকে জোর করা হয় এসব কাজ করতে। এভাবে একসময় শিশুটির উপর চলে নির্যাতন। কখনো শিশুটি মারা যায় কখনো কাঁদতে কাঁদকে কিছু না বুঝে বাবা-মা’র কাছে এসে বলতে থাকে। অনেক সময় এসব বিষয় আমাদের বাবা-মা’র ধারণার বাহিরে হওয়ায় তারা বিষয়টি আমলে নেয় না কিংবা ভাবে শিশু’টি হয়তো কী বলতে কী বলছে। হ্যাঁ, এটাই আমাদের বাস্তবতা। শুধু ধর্মীয় ব্যক্তিরাই নয় দেখতে আধুনিক বেশ-ভুষার অনেক মানুষও এগুলোর সাথে জড়িত হয়। তাই আমাদের সমাজের স্বার্থে আমাদের সন্তানের স্বার্থে আমাদের সচেতন হতে হবে আমাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। আমাদের শিশুদের শেখাতে হবে কারা তার শরীর স্পর্শ করতে পারবে, কোথায় স্পর্শ করলে ঐ মানুষটি থেকে দূরে সরে আসতে হবে কিংবা পরিবারের মানুষদের এই বিষয়টি সম্পর্কে বলতে হবে। সমাজের এসব অসুস্থতা কোন আধুনিক রোগ নয় এগুলো আমাদের সমাজে ছিল হাজার হাজার বছর ধরেই। তাই সময় এসেছে এগুলোর সম্পর্কে আমাদের ও আমাদের শিশুদের সচেতনতা করবার।
বাংলাদেশে কি পরিমাণ শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তার জন্য ২০১৫ সালের মে মাসের সংবাদ উল্লেখ করলে কিছুটা ধারণা পাওয়া সম্ভব। তিরিশ দিনের সংবাদপত্র টালী করে দেখলাম, মে মাসে কমপক্ষে ৫০ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, তারমধ্যে বড় একটা অংশের ধর্ষণের শিকার মেয়েরা শিশু এবং শিক্ষার্থী। এছাড়া কমপক্ষে অর্ধেক ধর্ষক সরাসরি তাদের শিক্ষক। বিশেষ করে মাদ্রাসার শিক্ষক। এই মাসেই পরপর পাঁচজন মাদ্রাসার ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে যাদের বয়স যথাক্রমে ৫, ১০, ১২, ১৪ এবং ১৬ যাদের মধ্যে তিনজন ধর্ষিত হয়েছে তাদের সরাসরি শিক্ষকের হাতে। আমি কয়েকটি ঘটনা একেবারেই সংক্ষেপে তুলে ধরতে চাই
১) ঘটনাস্থল কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী, দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া মেয়েটার বয়স ছিল ১০ বছর। মেয়েটা প্রতিদিন সকালে মুমুরদিয়া ফোরকানিয়া মাদ্রাসায় কোরআন শরীফ পড়তে যায়। মাদ্রাসা ছুটির পর তার শিক্ষক অন্য শিক্ষার্থীদের বিদায় দিলেও তাকে একটি কক্ষে নিয়ে মুখ রুমাল দিয়ে বেঁধে পাশবিক নির্যাতন করে। মাদ্রাসা থেকে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে শিশুটি তার বাবা-মাকে এসব কথা জানায়। অভিযুক্ত শিক্ষক জয়নাল মিয়া মুমুরদিয়া বাজার জামে মসজিদের ইমাম।
২) ঘটনাস্থল নারায়ণগঞ্জের বন্দর ধর্ষকের নাম শাহ আলম যে কি না আবার কোরআনের হাফেজ, উপজেলার কাইকারটেক খেয়াঘাট সংলগ্ন আদর্শ কিন্ডারগার্টেন মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক। সোমবার সকাল ১০টার দিকে মাদ্রাসার সামনে শিক্ষকের কক্ষে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। মেয়েটি একই মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী, সকালে স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়।
৩) ঘটনাস্থল গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের লাকচতল ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, মেয়েটি সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী, বয়স ১২ বছর। অসুস্থ থাকায় মেয়েটির মা-বাবা সম্প্রতি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ছাত্রী ও তার ছয় বছরের ছোট ভাইকে সেনাব এলাকার বাড়িতে রেখে বড় ভাই রিপন বাবা-মাকে হাসপাতালে দেখতে যান। বাবা-মার অসুস্থতা বেড়ে গেলে ভাই ওই দিন আর ফিরতে পারেননি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে ওই ছাত্রী ছোট ভাইকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত ১১টার দিকে ঘরের কাঠের দরজার খিল ভেঙ্গে একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান, সেন্দর আলীর ছেলে ভিলেন মিয়া, ইন্তাজ আলীর ছেলে সুমন ও সোহরাব হোসেনের ছেলে বাবু মিয়া। ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ওই ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে পাশের বনের ভেতরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর নিজ বাড়িতে নিয়ে আবার ধর্ষণ করে ভিলেন মিয়া।
৪) নন্দাইলে চকমতি ঢিএস মাদ্রাসার ফাজিল শ্রেণির এক ছাত্রীকে গত ৪ মে মাদ্রাসা থেকে তুলে নিয়ে যান মাদ্রাসার দপ্তরি ইকবাল হোসেন। ওই ছাত্রী অভিযোগ করে জানান, প্রেমের ফাঁদে ফেলে ইকবাল তাঁকে নেত্রকোনা সদরে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর মামা নজরুল বাসায় রেখে বিয়ের কথা বলে তাকে আটকে রাখেন। এ সময় বেশ কয়েকবার নির্যাতনের শিকার হন তিনি। প্রতিবাদ করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন ইকবাল।
৫) সৈয়দপুরে মাদ্রাসার এক শিশু শিক্ষার্থী অজ্ঞাত বখাটের ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ঘটনার পর থেকে শিশুটি অপ্রকৃস্থ আচরণ করছে। তার ভেতরের আতঙ্ক কাটেনি। এ ঘটনায় রিকশাচালক বাবা বাদী হয়ে মামলা করলেও এখনো কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
এবার দেখি সংবাদ পত্রে বিভিন্ন শিশু নির্যাতনের রিপোর্ট।
– শনিবার, ২১ জুন ২০১৪ ।মীরপুর মোহাম্মদী মাদ্রাসায় ছাত্রকে বলৎকার করায় হুজুর আটক।
রাজধানীর মীরপুর এলাকার মোহাম্মদীয়া মাদ্রাসা ছাত্রকে বলৎকার সেলিম (২১) নামে এক হুজুরকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
–ডিসেম্বর ৪, ২০১৪, সিলেটে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় এক মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে আটক করেছে পুলিশ।
-৩১ মার্চ ২০১৫, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বদরপুর গ্রামে এক কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মাদ্রাসার শিক্ষক সানাউল হক ওরফে বাবু ফকিরকে (২৮) কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
-এপ্রিল ২১, ২০১৫। মিরসরাইয়ে শিশুকে যৌন নির্যাতন, অভিযুক্ত শাহাদাৎ গ্রেফতার।
বৃহস্পতিবার (১০এপ্রিল) সন্ধ্যায় শিশুটির মা বাদি হয়ে মিরসরাই থানায় মামলা করেন। মামলায় শাহাদাতকে আসামী করা হয়। ওই রাতে খইয়াছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল চৌধুরীর সহযোগীতায় অভিযুক্ত শাহাদাৎ হোসেনকে (১৮) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
-২০ মে ২০১৫- দিনাজপুরে মাদ্রাসায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতন
দিনাজপুর দক্ষিণ কোতোয়ালির সীমান্তঘেঁষা কমলপুর ইউনিয়নে অবস্থিত নূরানী তালিমুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ৯ বছরের শিশু আবু সাঈদকে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য ৩ দিন মাদ্রাসার একটি কক্ষে আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করেছে মাদ্রাসার দুই শিক্ষক হাফেজ মো. রেজাউল ইসলাম ও মাওলানা শরিফুল ইসলাম। চিৎকার করে হাত-পা ধরে সে রেহাই পাইনি মানুষরূপী দানব দুই শিক্ষকের হাত থেকে। সোমবার সন্ধ্যায় নির্যাতনের একপর্যায়ে আবু সাঈদ জ্ঞান হারিয়ে ফেললে বিষয়টি এলাকার মানুষ জানতে পারে। পরে তারা মাদ্রাসার নির্জন কক্ষ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
– মে ২১, ২০১৫ – ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে ওই মাদ্রাসারই দপ্তরী।
– জুলাই ১ ২০১৫ – মুন্সীগঞ্জ: জেলার সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নে প্রথম শ্রেণির ১ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আব্দুল হামিদ (২৬) নামে ১ মাদ্রাসা শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।মঙ্গলবার সকালে ওই ইউনিয়নের কুসুমপুর আজিজিয়া মুখসুদুল উলুম মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
– ১০ আগস্ট, ২০১৫। ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটি মাদ্রাসায় ধর্ষণের শিকার হয়ে এক ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়েছে এমন খবর পাওয়ার পর রবিবার রাতে শফিকুল ইসলাম নামে এক শিক্ষককে আটক করা হয়।
-অগাস্ট ১৮, ২০১৫ – বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে এক মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে তার নিজ কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
-সেপ্টেম্বর ১ ২০১৫, – রাজধানীর শ্যামপুর থানাধীন ধোলাইপাড় এলাকায় এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে সেখানকার একটি মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে।অভিযুক্ত শিক্ষক স্থানীয় জামায়াত শাখার সাথে সংশ্লিষ্ট।
-২ সেপ্টেম্বর ২০১৫। চকরিয়ায় হাফেজিয়া মাদ্রায় শিশু ছাত্রকে বলৎকার করলো শিক্ষক।
বি,এম হাবিব উল্লাহ, চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি চকরিয়া পৌর শহরের তরছঘাট ছৈয়দ আহমদিয়া সুলতানুল উলুম হেফজখানা ও ফোরকানিয়া মাদ্রাসায় মাদ্রাসার তত্বাবধায়ক শিক্ষক হাফেজ মফিজুর রহমান (৪২) কর্তৃক একই মাদ্রাসার অধ্যায়নরত শিশু-কিশোর ছাত্র সাজ্জাদুল ইসলাম(১৩)কে জোর পুর্বক বলৎকার করার মতো গুরতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
– ২৬ অক্টোবর ২০১৫। কালকিনিতে মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ,
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুর এলাকায় এক ভ্যানচালকের মাদ্রাসা পড়ুয়া কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় রোববার রাতে ধর্ষিতা বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
এগুলো সামান্য খণ্ডচিত্র মাত্র। বাস্তবতা আরও বেশি ভয়াবহ। এবছর ১৩ অগাস্ট বিবিসি রিপোর্ট করে-ছেলে শিশুদের ওপরও যৌন নির্যাতন বাড়ছে। সেখানে বলা হয়-
বহু সংখ্যক শ্রমজীবী বা পথ-শিশু ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। লঞ্চ বা বাস টার্মিনাল, ফুটপাত, মার্কেট— যেসব জায়গায় আশ্রয়হীন মানুষ রাত্রি যাপন করে সেসব জায়গায় এমন ঘটনা ঘটছে’।
পত্রিকায় শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আব্দুস শহিদ মাহমুদ বিবিসিকে বলেন, ‘আগে শুধু আবাসিক স্কুল বা মাদ্রাসায় ছেলে শিশু ধর্ষণের শিকার হতো বলে অভিযোগ পাওয়া যেত। এখন এই ক্ষেত্র আরো বিস্তৃত হয়েছে’।
বাংলাদেশে বহু ছেলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও ভিকটিম বা পরিবারের সদস্যদের অনীহার কারণে এসব ঘটনা প্রকাশ কম হয়। আমরা শুধু যেসব ঘটনাই আমরা জানতে পারি, যেগুলো পরিস্থিতির কারণে তারা প্রকাশ করতে বাধ্য হয়। ঢাকায় নির্যাতনের শিকার ওই মাদ্রাসা ছাত্রের ক্ষেত্রেও একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তাহলে সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে আমাদের সমাজে এই বিষয়টি মারাত্মক আকারে হাজির হচ্ছে দেখেও আমাদের মধ্যে এক ধরণের উদাসীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে ফলে কেউ আমরা এই বিষয় নিয়ে সরাসরি কথা বলছি না, আলোচনা করছি না, সমাধানের পথ খুঁজছি না।
{তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে সহযোগিতা করায় ছোট ভাই আরিফ রহমানের কাছে ঋণী।}