
বাংলাদেশের পাসপোর্টে পৃথিবীর সকল স্বাধীন রাষ্ট্রে যাওয়া সম্ভব হলেও একমাত্র ইসরাইলে যাওয়া সম্ভব নয়। রাষ্ট্রটির সাথে আমাদের যেমন কোন কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই তেমনি রাষ্ট্রটিতে যাওয়ার জন্যে আছে নিষেধাজ্ঞা। তবে পৃথিবীর অনেক মুসলিম রাষ্ট্রের সাথে ইসরাইলের কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে। এমনকি সৌদি রাষ্ট্রের সাথে আছে অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক।
২৬শে মার্চ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ’কে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করার মধ্য দিয়ে দেশকে দখলদার মুক্ত করার জন্যে বাঙালি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশ’কে স্বীকৃতি দেয় ইসরাইল। ইসরাইল বাংলাদেশকে ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয়বার স্বীকৃতি দেয়। অথচ বাংলাদেশের গুটি কয়েক মুসলিম রাষ্ট্র (যেমন ইরাক) ছাড়া অন্য মুসলিম রাষ্ট্র ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টির বিরোধী। এমনকি দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও তারা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে নি। মুসলিম বিশ্বের মাতব্বর সৌদি আরব বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় শেখ মুজিবকে খুন করার পর। এমনকি হজ্ব পালনে বাঁধা পর্যন্ত দিয়েছিল সৌদি আরব। অথচ মুসলিম রাষ্ট্র থেকে স্বীকৃতি নেওয়ার জন্যে বাংলাদেশ OIC-তে যোগ দিয়েছিলেন। পাকিস্তানের সেই সম্মেলনে গিয়েছিলেন শেখ মুজিব।

১৯৭১ সালের এপ্রিলের ২৮ তারিখে বাংলাদেশ সরকারকে ইসরাইল স্বীকৃতি প্রদান করে একটি চিঠি পাঠায় এবং সেই সাথে অস্ত্র সাহায্য দেবে বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করে কিন্তু তৎকালীন মুজিব নগর সরকার সেই স্বীকৃতি ফিরিয়ে দেয়। তৎকালীন নেপালে নিযুক্ত ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত বলেন, “ইজরায়েল বাংলাদেশের জনগণের সংগ্রামের সাথে তাদের মিল খুঁজে পেয়েছিল।
দ্বিতীয়বার তারা আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় বাহাত্তর সালের ফেব্রুয়ারি মাসের চার তারিখে। মন্ত্রীপরিষদের নিয়মিত সভার অপেক্ষা না করে সব মন্ত্রীর সাথে টেলিফোনে আলাপ করে, তাদের সম্মতি নিয়ে ইজরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদকে তারবার্তা পাঠান।
srael Recognizes Bangladesh
February 7, 1972
JERUSALEM (Feb. 6)Israel has officially recognized the new state of Bangladesh. The announcement said that Foreign Minister Abba Eban informed Bangladesh Foreign Minister Abdus Samad Azad of the recognition in a cable Friday. The recognition decision was taken after telephone consultations with all members of the Cabinet Friday instead of waiting for today’s regular Cabinet meeting.
তবে তৎকালীন সরকার এর জবাব দেবার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন নি। ইসরাইল রাষ্ট্রটি আমরা সাপোর্ট করি বা না করি, ফিলিস্তিনের পক্ষে সমর্থন অথবা অন্যদের মতন মুসলিম মুসলিম ভাই ভাই ভিত্তিতে ইসরাইলকে যদি ঘৃণা/অস্বীকার করি তারপরও এই ইতিহাসটি মিথ্যে নয়। সত্য কিংবা ইতিহাস জানতে বা জানাতে হলে ঐ দেশটির আদর্শ গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক নয়।
ইসরাইলের সাইটে এখনও সেই স্বীকৃতি সংবাদটি আছে। লিংক-এখানে
“তবে তৎকালীন সরকার এর জবাব দেবার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন নি।”
আমার ধারণা তথ্য সংগ্রহের জন্য আপনি শুধু ইসরাইলের খবরের সাইট ছাড়া আর কোন পড়াশুনা করেন নি। করলে হয়তো জানতে পারতেন তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্বীকৃতি গ্রহণের অপারগতা জানিয়ে ফিরতি চিঠি পাঠানো হয়েছিল।
আর ইসরায়েল ঐ সময় ভারত ভাগ হওয়ার পর পাকিস্তানের সাথেও সম্পর্ক গড়ার চেস্টা করেছিল। কারণ টা অজানা কিছু নয়।
LikeLike
আপনি মিস করেছেন। আমি বলেছি, মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন সরকার সেই স্বীকৃতি ফিরিয়ে দেয়। যতোদূর জানি সরকার এর জবাব দেয় নি সেটি ১৯৭২ সাল। সরকার কী ১৯৭২ সালে কোন জবাব দিয়েছে?
LikeLike
নিশ্চই।
LikeLike
আমি মনে করি ইসরাইলের সাথে শুধুমাত্র ধর্মীয় ব্যাপারে বিরোধ নয়। বিরোধ নৈতিক ব্যাপারেও। আমরা পাকিস্তানের আগ্রাসন থেকে মুক্তি চাচ্ছিলাম যার জন্য মুক্তিযুদ্ধ, তখন কি করে আরেকটি দেশের দেশের স্বীকৃতি গ্রহন করবো যেখানে সেই দেশটিই আগ্রাসন চালাচ্ছে (ফিলিস্তিন এর উপর)। পাশাপাশি অন্য কারনগুলো তো আছেই।
LikeLike